মোঃ আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চত্বরের প্রধান গেটের সামনে ১২টি গ্রামের গ্রামবাসী ক্ষতিপুরনের দাবীতে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থ ১২টি গ্রামের প্রায় ৩হাজার গ্রামবাসী ক্ষতিপুরনের দাবীতে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফা’র নেতৃত্বে এই অবস্থান কর্মসূচী অনুষ্টিত হয়। অবস্থান কর্মসচীতে তিনি বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায়ে গত ০৫/১১/২০২৩ইং তারিখে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লি: পার্বতীপুর, দিনাজপুর কে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা লিখিতভাবে অভিযোগ করি।
গত ২২/০১/২০২৪ইং তারিখে আবারও লিখিতভাবে অভিযোগ করি। গত ১২/০২/২০২৪ইং তারিখে খনি কর্তৃপক্ষকে সময় দেওয়া হলেও তারা তোয়াক্কা করেন নি। এরপর আবারও ২২/০৮/২০২৪ এবং ০৮/০৯/২০২৪ইং তারিখে লিখিতভাবে অবগত করা হয়। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের নিকট ঘর-বাড়ী সার্ভের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়ে আসছি। সেই মর্মে বৈগ্রাম, কাশিয়া ডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বর পাড়া, দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর (ছোট), পূর্ব জ্জবর পাড়া, চক মহেশপুর, হামিদপুর, উত্তর চৌহাটি, চৌহাটি, সাহাগ্রাম, দূর্গাপুর ও শেরপুর সহ এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থদের পূণরায় ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবী জানিয়েছিলাম কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতি কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। সেই কারণে দীর্ঘদিন ধরে মিছিল মিটিং করে আসছি। আমাদের ৬দফা চুক্তির দাবীসমূহ: (০১) অবৈধ্য ভাবে ভূগর্ভে বিস্ফোরক ব্যবহারের কারণে সকল ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ীঘরের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। (০২) ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার সকল রাস্তাঘাট মেরামত করতে হবে। (০৩) ক্ষতিগ্রস্থ øকার বেকার ছেলে ও মেয়েদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরী দিতে হবে। (০৪) ক্ষতিগ্রস্থ একলাকার সুপেয় পানির সমস্যা সমাধান করতে হব।ে (০৫) ক্ষতিগ্রস্থদের, যাদের ভূমি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে তাদের কয়লা উৎপাদন বোনাস দিতে হবে। (০৬) মাইনিং সিটি অথবা উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি করে দিতে হবে।
তিনি অবস্থান কর্মসূচীতে আরও বলেন, আমাদের এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন আমাদের কিছুই বাঁকি নাই। বর্তমান যে গ্রামগুলি রয়েছে সেই গ্রামগুলির জনসাধারণ আমরা রাতে ঘুমাতে পারছিনা। প্রতি মূহুতে সামনে বিপদ দেখছি। চৌহাটি গ্রামের মোছাঃ মোসলেমা বেগম, মালেকা বেগম বলেন, খনি হওয়ার কারণে আমাদের বাড়ীঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। রাতে ঘুমাতে পারি না। প্রতিদিন বাড়ী ফেটে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আমাদের ক্ষতি পূরণ দিবে বলে আশ্বাস দিলেও এখন আর দিচ্ছে না। ক্ষতিকর্তৃপক্ষ দুই মাসের সময় নেন কিন্তু সময় নিলেও কাজের কাজ কিছুই করছেন না। এলাকার মানুষকে আশার আলো দেখিয়ে তারা একের পর এক এলাকার ভূগর্ভথেকে কয়লা উত্তোলন করছেন। আমরা জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্ঠা ও পেট্রো বাংলা চেয়ারম্যানের আসুহস্তক্ষেপ কামনা করছি ক্ষতিপূরণের দাবীতে।
অবস্থান কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন, আল বিরোনী, রবিউল ইসলাম, মোঃ আব্দুর রহমান, মোঃ আলী হোসেন, মোঃ রবিউল ইসলাম মন্ডল, আল বেরনী, সাতার ইকবার নয়ন, আবেদ আলী, সাইদুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী, আব্দুর রহমান বাচ্চু, রবিউল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, হোসেন আলী, মহারাজ, মেনহাজুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ মন্ডল, বিপ্লব হোসেন ও মমিদুল ইসলাম ও এবং তোফাজ্জাল হোসেন, বাবু , মফিজুল ইসলাম সাগর ইসলাম (নয়ন) প্রমুখ। এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওযা যায়নি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ক্ষতিপূরণ দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটি’র অবস্থান কর্মসূচী অব্যহত ছিল।